স্টাফ রিপোর্টার্স;
সখিপুর অজপাড়াগাঁয়ের সুমার(৯) আনন্দের সীমা নেই। সখিপুরের এনজিওকর্মীর বড় মেয়ে সুমার সাথে প্রতিবেদকের দেখা হয় খেলনা ট্রেন রাইডে, এতো ব্যস্ত যেন কথা বলার সময় নেই। এসময় পাশেই ছোট মেয়ে কনাকে (৪) সাথে নিয়ে খেলনার দোকানে পুতুল কেনায় ব্যস্ত ছিলেন তার মা । মায়ের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপচারিতায় মায়ের চোখে মুখে আনন্দের হাসিতে বলেন, সারাদিন খাটুনির পর বাচ্চাদের সময় দেওয়ার মানসিকতা থাকে না। উপজেলা মাঠে এ মেলা হওয়ায় আনন্দে চিত্তে বলতে লাগলেন, আমার মত একজন এনজিও কর্মীর স্ত্রীর জন্য হাতের কাছে বিনোদনের খোরাকের ব্যবস্থা করায় তিনি অনেক খুশি। তিনি আরও জানান, মেয়ে দুটোকে মেলার সব স্থান ঘুরে ঘুরে দেখালাম। যেহেতু বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ ঈদের আনন্দে বাড়তি বিনোদনের সুযোগ হয়েছে। আমার মেয়েরা মেলায় অনেক নতুন জিনিস দেখে তাদের সম্পর্কে জানতে শিখতে পেরেছে। এদিকে সুমার মা ব্যবহার্যের জন্য কিছু জিনিসপত্র সাধ-সাধ্যের মধ্যে কিনতে পেরে বিষম খুশি। তিনি বলেন, সংসারের নানা কাজে সারাদিন ব্যস্ত থেকে মেয়েদের দূরে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার মত সময় ও সামর্থ্য থাকে না । তাই সখিপুরে এ মেলায় এসে বাচ্চাদের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখাতে পেরে আনন্দিত হলাম । টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী চলা ঈদ আনন্দ মেলা জমে মূলত বেলা গড়িয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত । সখিপুর উপজেলাসহ আশে-পাশের কয়েক উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণির পেশার দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীরের মাঝে প্রতিদিন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেছে এ মেলা। এ মেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সার্কাস, নাগরদোলা, পুতুল নাচ, নৌকায় দোল খাওয়া, বাচ্চাদের ভাসমান সুইমিং,যাদু দেখার সুযোগ রয়েছে। দর্শনার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে হরেক রকম নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করছে। প্রতিদিনই মেলায় লোকসমাগম বাড়ছে।
গতকাল সন্ধ্যায় মেলায় হঠাৎ দেখা হয় বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সখিপুর সেলিম আল-দীন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ড.হারুন অর রশীদের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় বলেন, এক সময় সখিপুরে বিভিন্ন অঞ্চল ভিত্তিক এইরকম মেলার আয়োজন করা হতো। এমন আয়োজনে যেমন শিল্প ও সংস্কৃতির চর্চাও হয়, তেমনি মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বাড়ে। সখিপুর উপজেলা প্রশাসনের এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।
এবিষয়ে সখিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী ফারজানা আলম জানান, গ্রামীণ ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সখিপুরের মানুষকে ঈদের ছুটিতে বাড়তি বিনোদন দিতেই এ মেলা। এ মেলায় যেন সখিপুরের সর্বস্তরের মানুষ গ্রামীণ ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন শিল্প ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারে তার জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রী করা হয়েছে । তিনি আরও জানান, আশাকরি নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য বজায় রাখতে এ মেলা অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply